গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা-গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কি না? জেনে নিন

 বাঙালিদের কাছে কলা একটি লোভনীয় খাবার।  গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া কতটা উপকারিতা-গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া কতটা স্বাস্থ্যসম্মত তা আমরা অনেকেই জানি না। লোকমুখে শুধু শুনেই থাকি যে, কলার হাজার উপকারিতা রয়েছে । কিন্তুু এ কথা  গর্ভবতী মায়েদের  জন্যও কি প্রযোজ্য? সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

তো চলুন দেরি না করে ধাপে ধাপে জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা-গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কিনা সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা-গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কি না? 

গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিচে উপস্থাপন করা হলো ।

  • গর্ভাবস্থায় শরীরের দুর্বলতা দূর করতে আপনি কাঁচা কলা খেতে পারেন। কাঁচা কলা শর্করা ও শক্তির উৎস যা আপনার শরীরের দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে।
  • কাঁচা কলা গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের রক্ত শুন্যতা দূর করতে সহায়তা করে। 
  • কাঁচা কলা নিয়মিত খেলে এটি আপনার শরীরের  কোষ্ঠকাঠিন্য জাতিয় রোগ থেকে মুক্তি দেয়। 
  • কাঁচা কলায় ভিটামিন সি এর পরিমাণ বেশি থাকে। যার কারণে এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং রোগ জীবাণু সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে । 
  • কাঁচা কলা নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে এবং এটি আপনার মস্তিষ্কের মেইনব্রেনকে সুস্থ রাখে। 
  • কাঁচা কলায় পর্যপ্ত পরিমানে মিনারেল থাকে যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। 

এছাড়াও কাঁচা কলার আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে যেগুলো বলে শেষ করা যাবেনা। 

গর্ভাবস্থায় পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিত রয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানেন আবার অনেকেই জানেন না । নিচে গর্ভাবস্থায় পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা তুলে ধরা হলো ।

  • গর্ভাবস্থায় কলা খেলে বমি বমি ভাব ও অসুস্থতা দূর হয়। কলাতে থাকা ভিটামিন বি ৬ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গর্ভাবস্থায় দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ।
  • কলাতে থাকা ফোলেট  নামক উপাদান  শিশুর জন্মগত ক্রটি দূর করতে সহায়তা করে। 
  • গর্ভাবস্থায় অনেকের ত্বকে রুক্ষ ও শুষ্ক ভাব দেখা দেয় নিয়মিত কলা খেলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়  এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়।

আরো পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন ।

  • কলাতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। যেটি শিশুর পরিপূর্ণ পুষ্টি এবং  হাড়ের বৃদ্ধিতে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। 
  • গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কলা খেলে পেটের যাবতীয় সমস্যা যেমন গ্যাস্ট্রিক ,  পেট ফোলা ভাব, আলসার,  বদহজম ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 
  • গর্বের শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের উন্নতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন হলো ভিটামিন বি ৬ যেটা কলাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। 
  • গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কলা খেলে অ্যানিমিয়া  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 

এছাড়াও গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার আরো অনেক  উপকারিতা রয়েছে। আপনারা সকলেই চেষ্টা করবেন গর্ভাবস্থায় বাকি খাবারের সঙ্গে কলা নিয়মিত খাওয়োর যন্য।

গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কি হয় ?

গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা উভয় দিক রয়েছে। গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতার মধ্যে আজকে আমরা তুলনা করব।

উপকারিতাঃ  কলা পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কলা শরিরের রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। যেমন গর্ভাবস্থায় কলা খেলে শরীরের বমি বমি ভাব দূর হয়। কলাতে থাকা ফোলেট নামক উপাদান শিশুর শরীরের জন্মগত ত্রুটি দূর করতে সহায়তা করে। কলাতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি থাকায় এটি শিশুর  হার শক্ত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও আমিনিয়া রোগ  প্রতিরোধে কলা বিশেষ  ভূমিকা পালন করবে। গর্ভাবস্থায় কলা খেলে আলসার বদহজম গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা কম হয়।

আরো পড়ুনঃ মৌমাছি কামড়ালে করণীয়-মৌমাছি কামড়ালে জ্বালা করে কেন ? জেনে ‍নিন 

অপকারিতাঃ গর্ভাবস্থায় কলা খেলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। যেমন অনেকের এলার্জি সমস্যা হয়ে থাকে। আপনি যদি আগে কখনো কলা না খেয়ে থাকেন তাহলে গর্ভাবস্থায় কলা না খাওয়াই ভালো। এতে আপনার এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে । আবার হজমের সমস্যা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেট ফুলে ওঠার সমস্যা হতে পারে। আবার অনেকের গর্ভাবস্থায়  কলা খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। কারণ কলাতে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি এবং সুগার। যেটি খুব সহজেই আপনি ওজনকে বাড়িয়ে দিতে পারে।

আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন কলা খেলে কি হয় ।

গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কি না ?

আপনার অনেকে আমাদের কাছে প্রশ্ন করে থাকেন গর্ভাবস্থায়  কলা খাওয়া যাবে কি না? তো এই ধাপে আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব যে গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কিনা সে সম্পর্কে বিস্তারিত। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কি না? 

গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে। কিন্তু বিশেষ কিছু সময় আপনি খেতে  পারবেন না। যদি আপনার ওজন বেশি হয় বা আপনার শরীরে এলার্জি সমস্যা থাকে বা  আপনার যদি অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে তাহলে আপনি গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আর এগুলো সমস্যা যদি আপনি না থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে গর্ভাবস্থায় কলা খেতে পারেন। কিন্তু তারপরও আপনাকে লিমিটের মধ্যে কলা খেতে হবে ।অতিরিক্ত কলা কখনোই খাওয়া যাবে না। এতে আপনার শরীরের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। কিন্তু আপনি যদি নিয়ম মেনে কলা খান তাহলে আপনার শরীরের অনেক উপকার হবে। কারণ কলাতে প্রচুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে। 

আশা করি আপনারা গর্ভাবস্থায়  কলা খাওয়া যাবে কিনা সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। 

উপসংহার 

“গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা-গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কি না? ” সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি  সাজানো হয়েছে । এই আর্টিকেলটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আপনারা 
  • গর্ভাবস্থায় কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা 
  • গর্ভাবস্থায় পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা 
  • গর্ভাবস্থায় কলা খেলে কি হয় ?
  • গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কি না ? 
ইত্যাদি সম্পর্কে  বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন ।

আরো পড়ুনঃ ঠোঁট গোলাপি করার সহজ উপায় জেনে নিন 

গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা-গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া যাবে কি না? এ সম্পর্কে  বিস্তারিত তথ্য নিয়ে লেখা এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি আশা করি আপনার ভালো লেগেছে । যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আল্লাহ হাফেজ !

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url