উজ্জ্বল ত্বক পেতে কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
উজ্জ্বল ত্বক পেতে কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিত্যক্ত কমলার খোসা রূপচর্চায় ব্যবহার করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা যায়। উজ্জ্বল ত্বক পেতে কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা নিয়ম সমূহ নিচে তুলে ধরা হবে। চলুন দেখে নেই, উজ্জ্বল ত্বক পেতে কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার পদ্ধতি।
পেজ সূচিপত্র: উজ্জ্বল ত্বক পেতে কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
উপস্থাপনা
কমলার খোসায় থাকা পুষ্টি উপাদান ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। তাই কমলা খাওয়ার পরে খোসা ফেলে না দিয়ে তা বিশেষ পদ্ধতিতে ত্বকে ব্যবহার করলে উপকৃত হতে পারবেন। প্রাচীনকাল থেকেই উজ্জ্বল ত্বক পেতে কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করা হয়।
সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন ভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার কার্যকর উপায় হল কমলার খোসা ব্যবহার করা। যে সকল নিয়ম অনুসরণ করে কমলার খোসা ব্যবহার করলে অধিক উপকার পাওয়া যায়, কমলার খোসা ব্যবহার করার সেই নিয়মগুলো নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে।
উজ্জ্বল ত্বক পেতে কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা
আপনি যদি কমানোর খোসার ব্যবহার করে তবে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে চান, তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে কমলার খোসার সংগ্রহ করতে হবে। কমলা খাওয়ার পরে কমলার খোসা ফেলে না দিয়ে সেগুলো সংরক্ষণ করুন।
এরপর কমলার সেই খোসা গুলো পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে গুড়া করে নিন। কিভাবে কমলার খোসা গুড়া করে পাউডার তৈরি করতে হয়, সে বিষয় সম্পর্কে আর্টিকেলটির নিচের অংশে আলোচনা করা হবে।
যাই হোক, ত্বকের জন্য কমলার খোসার ফেস মাস্ক তৈরি করতে, দুই থেকে তিন টেবিল চামচ কমলার খোসার গুড়া নিতে হবে। এরপরে হালকা পানি দিয়ে চামচ দিয়ে নেড়ে নেড়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। তবে পানির পরিবর্তে গোলাপজল ব্যবহার করবেন আরো ভালো হয়। চাইলে আপনি সেই পেস্টের সাথে সামান্য পরিমাণে টক দই মিশ্রিত করতে পারেন।
এরপরে প্রস্তুতকৃত সেই ফেস মাস্ক মুখে মাখতে হবে। মুখে মাখার সময় সাবধান থাকতে হবে কমলার খোসার পেস্ট যেন চোখে এবং মুখের ভিতরে প্রবেশ না করে। যাইহোক ভালোভাবে, মুখে পেস্ট মাখার পরে ২০ থেকে ২৫ মিনিট রেখে দিতে হবে।
এরপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করার পরে সুতি, নরম ও পরিষ্কার টাওয়েল দিয়ে ভালোভাবে মুখ মুছে নিতে হবে। এরপরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
আপনি যদি স্থায়ীভাবে আপনার উজ্জ্বল করতে চান তাহলে, উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। এবং সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার কমলার খোসার ফেস মাস্ক ব্যবহার করলে আশা করা যায় স্থায়ীভাবে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
কমলার খোসা গুড়া করার উপায়
উজ্জ্বল ত্বক পেতে কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার উপায় সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। উপরে উল্লেখিত পদ্ধতি অনুসরণ করে যদি আপনি রূপচর্চায় কমলার খোসা ব্যবহার করেন, তাহলে আশা করা যায় ভালো ফলাফল পাবেন।
আপনি যদি কমলার খোসা গুড়া করে পাউডার তৈরি করতে চান তাহলে, সর্বপ্রথম আপনাকে কামলার খোসা শুকিয়ে নিতে হবে। কমলার খোসা ভালোভাবে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে পানি ঝেড়ে ফেলে দিয়ে একটি পাত্রে কমলার খোসা গুলো রাখতে হবে এবং তার শুকোতে দিতে হবে।
কয়েকদিন রোদে রাখলেই কমলার খোসা পুরোপুরিভাবে শুকিয়ে যাবে। এরপরে সেই শুকনা কমলার খোসা গুলো খুব সহজে আপনি গুড়া করতে পারবেন। শুকনা কমলার খোসা পাউডার করার সবথেকে সহজ উপায় হলো ব্লেন্ডার ব্যবহার করা।
ব্লেন্ডার ব্যবহার করে খুব সহজেই অল্প সময়ের মধ্যে আপনি কমলার খোসা করতে পারবেন। তবে চাইলে পাটায় বেটে কিংবা কাঠের গুড়া করার মেশিনের মাধ্যমেও কমলার খোসা করা যেতে পারে। কমলার খোসা করার পরে তা পরিষ্কার পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। কাঁচের পাত্র হলে বেশি ভালো হয়।
কমলার খোসার পাউডার ব্যবহারের নিয়ম
ইতোমধ্যেই উপরে উজ্জ্বল ত্বক পেতে কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা পদ্ধতির সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। আর্টিকেলটির এই অংশে কমলার খোসার পাউডার ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে।
কমলার খোসা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। কমলা খাওয়ার পরে কাঁচা খোসাও ত্বকে ব্যবহার করা যায়। তবে আপনি যদি প্রাকৃতিকভাবে ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য দীর্ঘদিন নিয়মিত কমলার খোসা ব্যবহার করতে চান, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে কমলার খোসার পাউডার ব্যবহার করতে হবে। কেননা কমলার খোসার পাউডার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়।
কিভাবে কমলার খোসার পাউডার তৈরি করা যায় সেই বিষয় সম্পর্কে ইতোমধ্যেই উপরে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে। উপর উল্লেখিত তথ্য যথাযথভাবে অনুসরণ করে খুব সহজেই আপনি কমলার খোসা থেকে পাউডার তৈরি করতে পারবেন। যাইহোক আসুন দেখে নেয়া যাক, কমলার খোসার পাউডার ব্যবহারের নিয়ম।
- এয়ার ফ্রেসার: কমলার খোসা যেহেতু সুগন্ধযুক্ত তাই কমলার খোসা খুব সহজেই এয়ার ফ্রেসার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কমলা খাওয়ার পরে কমলার খোসা গুলো ফেলে না দিয়ে খোসা গুলো কোন পাত্রে সংরক্ষণ করে ঘরের কোণে রেখে দিলে তা এয়ার ফ্রেসার হিসেবে কাজ করবে।
- অরেঞ্জ জেস্ট: বিভিন্ন ধরনের মুখরাচক রেসিপিতে অরেঞ্জ জেস্ট ব্যবহার করা হয়। আর অরেঞ্জ জেস্ট তৈরি করা হয় কমলার খোসা থেকে।
- এডেবল ফ্লেভার: আপনি যদি কোন খাদ্যে ফ্লেভার যুক্ত করতে চান, তাহলে কমলার খোসার গুড়ো ব্যবহার করতে পারেন। কমলার খোসার গুড়া ব্যবহার করলে তা আপনার খাদ্যের ফ্লেভার বৃদ্ধি করবে। যেহেতু কমলার ভাষা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক তাই এটি খাওয়াও সম্পূর্ণ নিরাপদ।
- ডিআইওয়াই ক্লিনার: বাড়ি পরিষ্কার করার কাজে কমলার খোসা ব্যবহার করলে বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়া যায়। কমলার খোসায় রয়েছে এক ধরনের এসিড, যা যেকোনো জিনিস পরিষ্কার করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই বাসা বাড়ির পরিষ্কার করার কাজে কমলার খোসা ব্যবহার করলে তা পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি তা সুগন্ধযুক্ত হবে।
- ত্বকের যত্নে: ত্বকের যত্নে কিভাবে কমলার খোসা ব্যবহার করতে হয় সেই বিষয় সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে। সুতরাং ত্বকের যত্নে কিভাবে কমলার খোসা ব্যবহার করতে হয় আশা করি তা জানতে পেরেছেন।
- ফায়ার স্টার্টার: ফায়ার স্টার্টার হিসেবেও কমলার খোসা ব্যবহার করা যায়। কমলার খোসা যখন শুকিয়ে যায় তখন ফায়ার স্টার্টার হিসেবে তা ব্যবহারযোগ্য হয়।
- পোকামাকড় দূর করতে: আপনি যদি প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার ঘর থেকে পোকামাকর দূর করতে চান, সেক্ষেত্রে কমলার খোসা হতে পারে আপনার জন্য মোক্ষম উপায়। কমলা খাওয়ার পরে কাঁচা খাসা গুলো একটি পাত্র সংরক্ষণ করে ঘরের যে কোন জায়গায় রেখে দিলে সেই ঘরে কোন ধরনের পোকামাকড় প্রবেশ করবে না।
উপসংহার
উজ্জ্বল ত্বক পেতে কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার জগতের পদ্ধতি সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি আপনি যদি উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করেন তাহলে কমলার খোসা ব্যবহার করে খুব সহজেই রূপচর্চা করতে পারবেন।
কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার পদ্ধতি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুবান্ধবসহ সকলের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এতে করে তারাও কমলার খোসা ব্যবহার করে উপকৃত হতে পারব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url