বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন

আপনারা কি বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন সে সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন পোস্টটি আপনাদের জন্য। গ্যাস কিংবা এসিডিটি খুব সাধারণ একটা সমস্যা। একটু অসাবধানতার কারণে এ থেকে বুক জ্বালা শুরু হয়ে যেতে পারে। আজকে আমরা আলোচনা করব বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন সে সম্পর্কে।
তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই, বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন সে সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন

বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে অনেকেই বুক জ্বালাপোড়ার ভোগান্তিতে পড়ে থাকেন। অকারণে হঠাৎ করে কি আপনার বুক জ্বালাপোড়া করছে? কেন করছে কিছুই বুঝতে পারছেন না? পানি খাবার পরও আরাম পাচ্ছেন না। অনেকে আবার গ্যাসের ওষুধ খায়। কিছু সময়ের জন্য আরাম পেলেও পরের দিন দেখা যায় আবারও বুক জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এর মূল কারণটা আসলে কি? 

আরো পড়ুনঃ পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বুক জ্বালার নাম হল গ্যাস্ট্রো ইসো ফিজিয়াম ফ্রেক্স। অর্থাৎ হঠাৎ করে কিছুটা খাদ্যনালীতে পাকস্থলীর অম্ল জাতীয় পদার্থ উঠে আসতে চায়। কিছু অভ্যাস কিংবা বিভিন্ন খাদ্য অদল বদল করার মাধ্যমে অনায়াসে সমস্যাগুলো মেটানো সম্ভব হয়। সেগুলো কি ও কিভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে আমাদের পুরো আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়লে আশা করি বুঝতে পারবেন। চলুন তাহলে বুক জ্বালা থেকে মুক্তির উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে আসি।

বুক জ্বালা থেকে মুক্তির উপায়

আমরা এখন বুক জ্বালা থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানব। বুক জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি পেতে হলে একবারে বেশি পরিমাণে খাবার কখনোই খাবেন না। বারে বারে অল্প অল্প করে খেতে পারেন। আপনি যদি পেট ভর্তি করে খাবার গ্রহণ করে থাকেন তাহলে পাকস্থলী খাদ্যনালির স্প্রিং এর দরজাতে চাপ ফেলে। সেজন্য মূলত বুক জ্বালা শুরু হয়ে থাকে। অনেকেই আবার খাবার গ্রহণ করার পরপরই শুয়ে পড়েন।

যা একদমই উচিত নয়। খাবার গ্রহণ করার পরপরই কখনোই শুয়ে পড়বেন না। খাবার গ্রহণ করার পর একটুও হাটাহাটি করতে পারেন, বই পড়তে পারেন, টিভি দেখতে পারেন, কিছুক্ষন বসে থাকেন। কিন্তু একেবারেই সাথে সাথে শুয়ে না পড়াটাই ভালো। ঘুমাতে যাবার ও খাওয়ার মাঝে অন্তত দুই ঘন্টা নেয়া লাগবে। তাহলে খাবার পাকিস্তানি থেকে নিচে নামার সুযোগ পেতে পারবে। খাওয়ার পরপরই ভারী কোন ব্যায়াম করা উচিত নয়। খাওয়ার পর ভারী ব্যায়াম করলে বুক জ্বালাপোড়া করার সম্ভাবনা থাকে।

আরো পড়ুনঃ প্রেগন্যান্ট বা গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার ০৮টি কার্যকরী উপকারিতা

রাতের বেলায় যাদের একটু বুক জ্বালাপোড়া করে তারা মাথাকে একটু উঁচু করে রেখে ঘুমাবেন। সফট ড্রিংক স জাতীয় পানীয় এই ধরনের সমস্যা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এই সমস্যা বেশ কিছু খাবারেই বেড়ে যায়। যেমন-টমেটো, ফুলকপি, কফি, চকলেট, চর্বিযুক্ত খাবার, মসলাযুক্ত খাবার ইত্যাদি। কোন কোন খাবার খেলে বুক জ্বালা শুরু করে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেই সকল খাবার গুলো খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিলেই আশা করা যায় বুক জ্বালা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

বুক জ্বালা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি

প্রায় প্রতিটা মানুষেরই গ্যাস কিংবা এসিডিটির সমস্যা থাকে। একটু অসাবধানতার কারণেই এই সমস্যা শুরু হয়ে যেতে পারে। গ্যাস কিংবা এসিডিটির সমস্যার প্রধান লক্ষণ হচ্ছে বুক জ্বালা পোড়া করা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবার জন্য অনেকেই ওষুধ ও রাসায়নিক পূর্ণ ইনস্ট্যান্ট পানীয় সেবন করে থাকে। এই পানীয় গুলো পান করার ফলে সাময়িকভাবে বুক জ্বালা দূর হলেও এর ক্ষতিকর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। সেজন্য এই ধরনের সমস্যা গুলো থেকে মুক্তি পাবার জন্য যতটুকু সম্ভব ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করাই উত্তম। চলন বুক জ্বালা দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে আসি।

  • কয়েকটা তুলসী পাতা ভালোভাবে ধুয়ে চিবিয়ে খেলেই গ্যাস্ট্রিকের কারণে বুক জ্বালা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
  • এক চামচ আদা কুচি একটা পানিতে কয়েক মিনিট জাল দেয়ার পর খেলে বুক জ্বালাপোড়া রোধ করে।
  • এক গ্লাস পানিতে এক চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পান করলে তাৎক্ষণিক বুক জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য এটা বেশ কার্যকর।
  • খাবার খাওয়ার আগে আধা কাপ এলোভেরা জুস পান করলে বুক জ্বালাপোড়া ও ইনফ্লামেশন দূর করে। তবে অতিরিক্ত এলোভেরা জুস পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা অতিরিক্ত অ্যালোভেরা জুস খেলে ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে।
  • ঠান্ডা দুধ এসিডিটির সমস্যা তাৎক্ষণিক ভাবে দূর করতে কোন জুড়ি নাই।
  • দারুচিনি হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ উপকারী একটা মসলা। এটা প্রাকৃতিক এন্টাসিড হিসেবে কাজ করে এবং পেটের গ্যাস দূর করার ক্ষেত্রেও সাহায্য করে থাকে।
  • এক কাপ পানিতে দুই চামচ জিরা দিয়ে ১০ মিনিট ফুটাতে হবে। এবার ঠান্ডা হয়ে গেলে সেই পানি পান করতে হবে। এতে করে পেটে গ্যাস হওয়া থেকে দূরে রাখবে।

বুক জ্বালাপোড়ার লক্ষণ

বুক জ্বালাপোড়া অনেকেরই প্রায় হয়ে থাকে। তবে আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা গুলো হয়েছে। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা কিছু বুক জ্বালাপোড়া লক্ষণ সমূহ তুলে ধরেছি। যে লক্ষণগুলো দেখলে বুঝবেন আপনার জ্বালাপোড়ার সমস্যা ভুগছেন। আর বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন সেটাও বুঝতে পারবেন।
  • পেটের উপরের দিকে হালকা মৃদু ব্যথা হলে বুক জ্বালাপোড়ার কারণ হতে পারে।
  • বুক ব্যথার সাথে জ্বালা ভাব থাকা।
  • বিশ্রামের সময় ব্যথা ও বুক জ্বালাপোড়ার বৃদ্ধি হতে পারে। শুয়ে থাকা অবস্থায় কিংবা আধো শোয়া অবস্থায় এসিড খাদ্যনালী দিয়ে উপরের দিকে উঠে আসার ফলে বুক জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে।
  • বুক জ্বালাপোড়া হবার সাথে সাথে ঢেকুর ও উঠতে পারে।
  • কারো কারো খালি পেটে থাকলে বুক জ্বালা পোড়া করে আবার কারো খাবার গ্রহণ করার পরে হয়ে থাকে।
  • পাকস্থলীর এসিড সম্প্রসারিত হয়ে খাদ্যনালির ওপর পর্যন্ত চলে আসার কারণে ও বুক ব্যাথা ও জ্বালা হতে পারে।
  • বুক জ্বলার সাথে বমি বমি ভাব কিংবা বমিও হতে পারে।
  • স্বড়ভঙ্গ বুক জ্বালাপোড়ার অস্বাভাবিক একটা লক্ষণ। অম্ল বা এসিড পাকস্থলী থেকে কলা পর্যন্ত উঠে আসার ফলে এমনটা হতে পারে।
  • বুক জ্বালাপোড়ার কারণে মুখে তিতা স্বাদ অনুভূত হবার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে সকালের দিকে এমনটা বেশি ঘটে থাকে।

শেষ কথাঃ বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন

বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন সে সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। 

আজ আর নয়, বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন সে সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই বুক জ্বালা থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন সে সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬ 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url